সোমবার ১০ নভেম্বর ২০২৫ - ১৫:২৩
আলেমদের সক্রিয় উপস্থিতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপরিহার্য

হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন আবদুল মজিদ হাকিম ইলাহি ভারতের আলেমদের এক বৈঠকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলেমদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার তরুণ প্রজন্মকে সঠিক পথে পরিচালনা ও ইসলামের সত্য বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য অত্যন্ত জরুরি।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের হায়দরাবাদ শহরের একদল আলেমের সঙ্গে সাক্ষাতে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতার প্রতিনিধি হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন আবদুল মজিদ হাকিম ইলাহি বলেন, আলেমদের উচিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সক্রিয় ভূমিকা রাখা এবং নতুন প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার করা, যাতে তরুণ সমাজকে সঠিক ইসলামি বার্তা পৌঁছে দেওয়া যায়।

বৈঠকের শুরুতে হাকিম ইলাহি সাঈদা ফাতিমা যাহরার (সা.) মহান মর্যাদার প্রতি ইঙ্গিত করে তাঁর গুণাবলি ও মহত্ত্ব তুলে ধরেন এবং সমাজের নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও সামাজিক গঠনে তাঁর আদর্শিক ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে দেন।

তিনি ডিজিটাল যুগে তরুণদের জীবনযাপনের ধরণ পরিবর্তন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও আধুনিক গণমাধ্যম তরুণদের চিন্তা ও আচরণে গভীর প্রভাব ফেলেছে। ২০২৫ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিপুলসংখ্যক তরুণ তাদের সময় ও শক্তি এমন কর্মকাণ্ডে ব্যয় করছে, যা ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধবিহীন; ফলে তারা জীবনের বাস্তব লক্ষ্য ও সুযোগগুলো থেকে বিমুখ হয়ে পড়ছে।

তিনি আরও বলেন, আলেমদের উচিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জগতে সক্রিয় ও সচেতন উপস্থিতি বজায় রাখা, যাতে তরুণ প্রজন্মের কাছে ইসলামের সঠিক বার্তা পৌঁছে দেওয়া যায়। যদি আমরা এই ক্ষেত্র ত্যাগ করি, তবে নেতিবাচক ও শয়তানি শক্তিগুলো সেখানে প্রভাব বিস্তার করবে। সুতরাং ডিজিটাল পরিসরে তরুণদের মানসিক ও আধ্যাত্মিক দিকনির্দেশনা দেওয়া আলেমদের এক পবিত্র ও সামাজিক দায়িত্ব।

হাকিম ইলাহি আলেমদের নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেন, আলেম ও প্রচারকদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মশালা ও শিক্ষামূলক সভার আয়োজন করা প্রয়োজন, যাতে তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) সহ আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে জানেন এবং এগুলোকে ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে পারেন।

বৈঠকের শেষ অংশে ভারতের মজলিসে উলামা ও যাকেরিন–এর সভাপতি হুজ্জাতুল ইসলাম সৈয়দ নিসার হুসাইন হায়দার অতিথি ও উপস্থিত আলেমদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এই বৈঠক পারস্পরিক মতবিনিময়, বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা ও ধর্মীয় সমন্বয় জোরদারের এক বরকতময় সুযোগ।” তিনি যোগ করেন, ডিজিটাল যুগের তরুণরা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি নৈতিক ও মানসিক দিকনির্দেশনার প্রয়োজন বোধ করছে। আলেমরা কেবল সচেতন উপস্থিতি, আধুনিক প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার এবং ইসলামের খাঁটি বার্তা প্রচারের মাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক ধারার অনুপ্রবেশ রোধ করতে পারবেন এবং ইসলামী সমাজের বিকাশ ও উৎকর্ষের পথ প্রশস্ত করবেন।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha